ঘুরে আসুন জল পাথড়ের ভূমি বিছনাকান্দি থেকে


সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিছনাকান্দি। বিছনাকান্দির মূল আকর্ষণ হচ্ছে ভারতের উঁচু পাহাড়ের ঝর্ণা থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ শীতল জলধারা এবং দূরের আকাশচুম্বী পাহাড়ের সৌন্দর্য। পানির গভীরতা বেশি নয় বলে পরিষ্কার পানিতে উঁচু-নিচু পাথরগুলোকে দেখা যায়। নদীটির দুই পাশেও রয়েছে পাথরের সারি। সামনের দিকে তাকালে ঝর্ণা এবং উঁচু পাহাড়ের আঁকাবাঁকা সারিগুলো আপনার মন কাড়বে।




ভ্রমণবিলাসীদের জন্য এই স্পটের মূল আকর্ষণ হলো পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা পানিপ্রবাহ। তাছাড়া  বর্ষায় থোকা থোকা মেঘ আটকে থাকে পাহাড়ের গায়ে, মনে হতে পারে মেঘেরা পাহাড়ের কোলে বাসা বেঁধেছে। পূর্ব দিক থেকে পিয়াইন নদীর একটি শাখা পাহাড়ের নীচ দিয়ে চলে গেছে ভোলাগঞ্জের দিকে। সব মিলিয়ে পাহাড়, নদী, ঝর্ণা আর পাথরের এক সম্মিলিত ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই বিছনাকান্দি।

পাথরপূর্ণ নদী, নদীর দুই পাশে পাথরের স্তূপ, মাঝখানে পাথরগুলোর বুক ছুঁয়ে শীতল পানির বয়ে চলা আর সম্মুখে উঁচু পাহাড়ের মনহরণকারী সুন্দরের সমাহার, এসব কিছু মিলে প্রকৃতি যেন এক জলপাথরের স্বর্গ রচনা করেছে এখানে। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্যের মাঝে কিছুটা সময় কাটাতে পারলে আপনার কেমন লাগবে একটু ভেবে দেখুন তো। একটু সময় করে আপনিও বিছনাকান্দির এই সৌন্দর্য দেখে আপনার চোখ জুড়িয়ে আসতে পারেন, পাশাপাশি শীতল পানির স্রোতের গা ভিজিয়ে মনে জাগিয়ে তুলতে পারেন অন্যরকম ভালোলাগা।তাই বেড়িয়ে পড়ুন সিলেটের উদ্দেশ্যে। ঘুরে আসুন জল পাথড়ের ভূমি বিছনাকান্দি থেকে।






ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

জুন থেকে সেপ্টেম্বর, বিশেষত বৃষ্টি ও বর্ষায় বিছনাকান্দি সবচেয়ে বেশি মনোরম ও দৃষ্টিনন্দন। শুকনো মৌসুম ও শীতকালে ভারী যন্ত্র ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন- সেই সাথে পাথরবাহী নৌকা, ট্রাকের উৎপাতের কারণে পর্যটকদের জন্য এসময় উপযুক্ত নয়। কিন্তু বর্ষায় এইসব থাকেনা বলে পাহাড়, নদী, ঝর্ণা, মেঘের সমন্বয়ে বিছনাকান্দি হয়ে উঠে এক অনিন্দ্য সুন্দর গন্তব্য।

হোটেল
নিকটতম হোটেলগুলো গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। হোটেল আল মদিনা ও নান্নু মিয়ার হোটেল উল্লেখযোগ্য।
রেস্টুরেন্ট
খুব উন্নতমানের কোন রেস্টুরেন্ট আশেপাশে গড়ে উঠেনি। তবে নিকটবর্তী হাদারপাড় বাজারের ‘পাকশি রেস্টুরেন্ট’, ও ‘পিয়াইন রেস্টুরেন্ট’ দুটি পর্যটকদের চাহিদামাফিক খাবার পরিবেশনের চেষ্টা করে থাকে।
বিনোদন
বিনোদনের জন্য এখনও কোন স্থাপনা বা ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি।
ব্যাংক ও এটিএম বুথ
নিকটবর্তী হাদারপাড় বাজারে কৃষি ব্যাংক এর একটি শাখা রয়েছে তবে কোন। গোয়াইনঘাট উপজেলায় রয়েছে সোনালী ব্যাংক ও পূবালি ব্যাংকের দুটি শাখা।  কোন এটিএম বুথ নেই।
    

কিভাবে যাওয়া যায়:
বর্ষাকালে- সড়কযান (রেন্ট মাইক্রোবাস কিংবা সিএনজি চালিত অটোরিক্সা) ও নৌযানের (ইঞ্জিনচালিত অথবা সাধারণ নৌকা) সমন্বয়ে। শুকনো মৌসুমে- সড়কযান বিছনাকান্দি যাওয়ার একাধিক পথ রয়েছে। তবে সুবিধাজনক পথ মূলত একটিই। বিমানবন্দরের দিকে এগিয়ে ডানে মোড় নিয়ে সিলেট- কোম্পানীগঞ্জ রোডে সালুটিকর, সালুটিকর থেকে এগিয়ে ডানে মোড় নিয়ে বঙ্গবীর, বঙ্গবীর থেকে কিছুদূর গিয়ে বামে মোড় নিয়ে হাদারপাড় বাজার। হাদারপাড় বিছনাকান্দির একেবারেই পাশে। এখান থেকে স্থানীয় নৌকা নিয়ে বিছনাকান্দি যাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। বিছনাকান্দি পর্যন্ত গাড়ী পৌছায় না। সিলেট এর যেকোন স্থান থেকে বিশেষত আম্বরখানা থেকে হাদারপাড় পর্যন্ত ভাড়ায় সিএনজি পাওয়া যায়।

No comments:

Post a Comment

Travel

ঘুরে আসুন হামহাম জলপ্রপাত

প্রকৃতির অপরূপ লীলাভুমি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় নতুন সন্ধান পাওয়া রোমাঞ্চকর নয়নাভিরাম হামহাম জলপ্রপাত একনজর দেখার জন্য দেশের বিভ...